শর্মিলী আহমেদ ও আলম খান চলে যাওয়ার এক বছর

Social Share Buttons

রেণ্য অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ এবং বাংলা গানের কিংবদন্তি সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলম খানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী শনিবার (০৮ জুলাই)। ২০২২ সালের আজকের এই দিনেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তারা।

শর্মিলী আহমেদের প্রকৃত নাম মাজেদা মল্লিক। ১৯৪৭ সালের ৮ মে রাজশাহীতে তার জন্ম। রাজশাহী বেতারের শিল্পী ছিলেন তিনি। তার প্রথম সিনেমা উর্দু ভাষায় নির্মিত ‘ঠিকানা’ মুক্তি পায়নি। ষাটের দশকে নায়িকা হিসেবে তিনি নাম কামিয়েছেন সুভাষ দত্তের ‘আলিঙ্গন’, ‘আয়না ও অবশিষ্ট’, ‘আবির্ভাব’ সিনেমায়। কিছু উর্দু সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন তিনি।

স্বামী পরিচালক রূপকারের (রকিবউদ্দিন আহমেদ) ‘পলাতক’ সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন শর্মিলী আহমেদ। স্বাধীনতার পরে ‘রূপালী সৈকতে’, ‘আগুন’, ‘দহন’, ইত্যাদি সিনেমায় অভিনয় করেন। ‘আগুন’ সিনেমায় প্রথম তিনি বয়সী মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন।

এছাড়াও প্রায় ৪০০ নাটক অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয় জীবনে মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রের বৈচিত্র্যপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করে সবার মন জয় করেছেন। অভিনয়জীবনে মায়ের চরিত্রে এতো বেশি অভিনয় করেছেন যে, বিনোদন অঙ্গনে তিনি সবার কাছে ‘মা’ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন।

এদিকে, ১৯৪৪ সালে সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আলম খান। তার বাবা আফতাবউদ্দিন খান ছিলেন সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার ও মা জোবেদা খানম ছিলেন গৃহিণী।

১৯৬৩ সালে রবিন ঘোষের সহকারী হিসেবে তালাশ চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করেন আলম খান। এরপর ১৯৭০ সালে আবদুল জব্বার খানের ‘কাঁচ কাটা হীরে’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।

কয়েক দশক ধরে অসংখ্য সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনার মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সঙ্গীতের কিংবদন্তি। ধারাবাহিক সাফল্যের মধ্য দিয়ে তিনি সৃষ্টি করেন একের পর এক জনপ্রিয় গান।

আলম খানের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় হওয়া অসংখ্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘কি জাদু করিলা’, ‘ওরে নীল দরিয়া’, ‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেবো না’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘সাথীরে যেও না কখনো দূরে’, ‘কাল তো ছিলাম ভালো’, ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া’ ইত্যাদি।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আলম খান শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতপরিচালক হিসেবে ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিল’ সিনেমার মাধ্যমে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এরপর তিনি ‘তিন কন্যা’ (১৯৮৫), ‘সারেন্ডার’ (১৯৮৭), ‘দিনকাল (১৯৯২) এবং ‘বাঘের থাবা’ (১৯৯৯), ‘এবাদত’ (২০০৯) সিনেমাগুলোতে একই পুরস্কারে ভূষিত হন। শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে ২০০৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ‘কি জাদু করিলা’ সিনেমা জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *