দুই মেয়র সমর্থক শ্রমিক সংঘর্ষে বরিশালে বাস চলাচল বন্ধ

Social Share Buttons

বরিশালে বর্তমান ও নবনির্বাচিত মেয়র সমর্থক শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে বন্ধ হয়ে যায় দক্ষিণাঞ্চলের যান চলাচল। বন্ধ করা হয় অভ্যন্তরীণ রুটের বাস চলাচল।

শুক্রবার (২১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক শ্রমিক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত শ্রমিকদের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সুপারিশে মহানগর শ্রমিক লীগের কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। যেখানে সভাপতি করা হয় সদ্য বিলুপ্ত মহানগর শ্রমিক লীগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পরিমল দন্দ্র দাসকে ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে সদ্য বিলুপ্ত মহানগর ছাত্রলীগ কমিটির আহবায়ক রইজ আহমেদ মান্নাকে।

সদ্য বিলুপ্ত মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন নতুন কমিটির ব্যাপারে কিছুই জানেন না দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার নগরীর নথুল্লাবাদ ও রুপাতলী বাস স্ট্যান্ডে মানববন্ধনের ঘোষণা দেন। তাদের এই কর্মসূচির মধ্যে সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ অনুসারী বাস মালিক সমিতির সাবেক নিয়ন্ত্রনকারী কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মোল্লার নেতৃত্বে কিছু শ্রমিক নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ডে উপস্থিত হয়। তারা এসময় বাস শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন চেয়ে অন্দোলন করে। এক পর্যায় আফতাব ও লিটন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দফায় দফায় হাতাহাতি-ধস্তাধস্তি চলে। দুইদল শ্রমিকের দফায় দফায় মারামারির জেরে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীন রুটের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকরা রাস্তায় গাড়ি এলামেলো করে রাখে। এতে ঢাকা-বরিশালসহ দক্ষিনাঞ্চলের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর বেলা ১২টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়।

টার্মিনাল সূত্রে জানা গেছে, বিবাদমান শ্রমিকের একপক্ষ নবনির্বাচিত সিটি মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লার সমর্থক।তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আফতাব হোসেন। অপরপক্ষের নেতা কামাল হোসেন লিটন মোল্লা বর্তমান সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহ অনুসারী।

পরে ঘটনাস্থলে আসেন সদর আসনের এমপি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুকের অনুসারী ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব, নবনির্বাচিত সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ অনুসারী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন ও বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মঈন তুষারসহ বেশ কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী। তারা আফতাব হোসেনের সাথে টার্মিনাল অফিসে অবস্থান নেন। এসময় বিপুল পরিমান পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়।

বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আফতাব হোসেন জানান, তিনি বাস স্ট্যান্ডে প্রবেশের সাথে সাথে লিটন মোল্লার নেতৃত্বে কিছু লোক তার ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে। একইসাথে তারা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন দাবি করে।

আফতাব বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন দেয়ার এখতিয়ার তার না থাকেলেও সেই ইস্যুতেই হামলা চালানো হয়। পরে পুলিশ তাকে রক্ষা করেছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, বিদায়ী মেয়র সাদিকের ইন্ধনে লিটন মোল্লা টার্মিনালে অরাজকতার চেষ্টা চালাচ্ছে।

জানা গেছে, সিটি নির্বাচনের পর সাদিক অনুসারীদের হটিয়ে টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নেন আফতাব হোসেন। সাদিকপন্থীরা পুনরায় টার্মিনালের নিয়ন্ত্রন নেয়ার চেষ্টার করলে গত কয়েকদিন যাবত টার্মিনাল এলাকায় উত্তেজনা চলছিল। শুক্রবার সকালে লিটন মোল্লা দলবলসহ টার্মিনালে ঢুকলে হামলা-পাল্টা হামলা হয়। অন্যদিকে লিটন মোল্লা বলেন, তিনি শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন দাবী করায় আফতাবের নির্দেশে হামলা চালানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *