বরগুনা আমতলী উপজেলার ৬৫ নম্বর উত্তর টিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় তিন বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। এতে করে শিক্ষার মান ভেঙে পড়ার উপক্রম এবং দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, তিন বছর আগে বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি নতুন ভবন। কবে হবে তাও জানে না কেউ। ফলে বাধ্য হয়েই রোদ-ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দীর্ঘ তিন বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে চলছে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭৩ সালে আমতলী উপজেলার উত্তর টিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে টিনশেডের ঘরে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলছিল। ২০০৩ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর একতলা ভবন নির্মাণ করে দেয়। ভবন নির্মাণের ১০ বছরের মাথায় ছাদ ও দেয়ালে ফাটল ধরে পলেস্তারা খসে পড়ে। ২০২১ সালে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ ওই বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণার পর থেকেই স্থান সংকুলান না হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের রোদে গাছতলায় এবং বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা। গত তিন বছর ধরে এভাবেই চলছে ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান।
বুধবার (১২ জুলাই) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাছতলায় এবং তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় পাঠদান করানো হচ্ছে। অন্য শ্রেণির ক্লাস একটি ছোট টিনের ঘরে পাঠদান করানো হচ্ছে।
শিক্ষার্থী মরিয়াম, মারিয়া ইসলাম, আবু হানিফ, সাকিল, হাসিবুর রহমান, মাহফুজ ও নাজমা আক্তার জানায়, প্রচুর রোদে গাছতলায় এবং বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় পাঠদান করতে হচ্ছে তাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দ্রুত স্কুলভবন নির্মাণের দাবি জানান তারা।
নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করলেও ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান।
সহকারী শিক্ষক মোশাররফ, ছালমা আক্তার ও ডেইজি বিশ্বাস বলেন, স্থান সংকুলান না হওয়ায় পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। রোদে গাছতলায় এবং বৃষ্টিতে বারান্দায় ক্লাস করছি। গত তিন বছর ধরে এভাবেই পাঠদান চলছে। এতে আমাদের বেশ সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের দাবি জানান তারা।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সফিকুর রহমান বলেন, ওই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের চাহিদা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, দ্রুত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।