রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকের জেরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি’ জিনপিংকে সতর্কবার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বন্ধুত্ব চীনের অর্থনীতিতে বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার মার্কিন বার্তাসংস্থা সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘(চীনের প্রেসিডেন্ট) শি’ জিনপিংয়ের সঙ্গে সম্প্রতি আমার কথা হয়েছে। তাকে আমি বলেছি, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকে এ পর্যন্ত ৬০০ মার্কিন কোম্পানি রাশিয়া থেকে নিজেদের ব্যাবসায়িক কার্যক্রম হয় বন্ধ করেছে, নয়তো বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।’
‘এর আগে একবার জিনপিং আমাকে বলেছিলেন যে আপনার দেশের অর্থনীতি অনেকাংশে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের ওপর নির্ভরশীল। আমি তাকে তার সেই বক্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে সতর্ক থাকতে বলেছি।’ ‘এটা কোনো হুমকি ছিল না। আমি কোনো হুমকি দিই নি, কেবল আমার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছি তার কাছে।’
গত ৪ জুলাই এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো জোট সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলনে ছিল। ভৌগলিক বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম এই আঞ্চলিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা জোটের সম্মেলনে নিজ নিজ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে অংশ নিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন ও শি’ জিনপিং।
ভার্চুয়াল মাধ্যমে হওয়া এই সম্মেলন শেষে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন দুই নেতা। এর আগে গত মার্চে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব নিয়ে দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মস্কো সফরে গিয়েছিলেন শি’জিনপিং। কিন্তু সেই সফরে অর্থনীতি ও দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা হলেও ইউক্রেনে শান্তি স্থাপন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
গত শতকের বিশের দশকে সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশটির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয় পুঁজিতান্ত্রিক যুক্তরাষ্ট্রের। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পরও অব্যাহত ছিল দুই দেশের মধ্যকার বৈরী মনোভাব। তবে গত কয়েক বছরে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে এবং রুশ বাহিনী ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর তা আরও তিক্ত হয়েছে।
চীনের সঙ্গেও গত কয়েক বছর ধরে চরম তিক্ততা চলছে যুক্তরাষ্ট্রের। এই তিক্ততার মূল কারণ তাইওয়ান ইস্যু। শুক্রবারের সাক্ষাৎকারে সিএনএনের পক্ষ থেকে বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়— তিনি জিনপিংকে সাম্প্রতিক এই সতর্কবার্তা দেওয়ার চীনের প্রেসিডেন্টের মনোভাব কেমন ছিল। উত্তরে বাইডেন বলেন, ‘তিনি শুনেছেন…কিন্তু কোনো মন্তব্য করেননি। আমার মনে হয় না, রাশিয়ার প্রতি তার টান কমেছে।’