লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের নিউ উপশম হাসপাতালে ফাতেমা বেগম নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার বাদীর আইনজীবী মো. রেহানুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
রোববার জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল রামগঞ্জ আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন এ নির্দেশ দেন। ফাতেমার স্বামী মনর আলী আদালতে এ-সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন তিনি।
আইনজীবী রেহানুল ইসলাম বলেন, অচেতন (অ্যানেসথেসিয়া) না করেই গৃহবধূর অস্ত্রোপচার (সিজার) করা হলে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় বাদী আদালতে অভিযোগ জমা দেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে বিচারক রামগঞ্জ থানার ওসিকে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত চিকিৎসক নাজমুল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালট্যান্ট এবং গুনময় পোদ্দার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। এ ছাড়া নাজমুল উপশম হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ। আর গুনময় অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ও মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। অন্য দুই অভিযুক্ত হলেন- হাসপাতালের চেয়ারম্যান মায়া বেগম ও ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) জসিম উদ্দিন।
এজাহারে বলা হয়, গত ৪ জুলাই ফাতেমার প্রসব ব্যথা উঠলে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এর পর নাজমুল ও গুনময় প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পর ফাতেমা চিৎকার করে ওঠেন। পরে নাজমুল জানান, মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়েছে। ফাতেমাকে বের করা হলে তিনি স্বজনদের জানান, দুই চিকিৎসক তার ‘কলিজা ছিঁড়ে ফেলেছে’। তাকে অচেতন না করেই পেটে ছুরি চালানো হয়েছে।
এতে ফাতেমা চিৎকার দিলে চিকিৎসক গুনময় তার মুখ ও নার্সসহ কর্মচারীরা হাত-পা চেপে ধরেন। পরে নাজমুলের নির্দেশে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলা হয়। পথে তিনি মারা যান।
স্বামী মনর আলী বলেন, তার স্ত্রীর পেটের বাঁ পাশে অস্বাভাবিকভাবে ফুলে ছিল। চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় সে মারা গেছে।
এ বিষয়ে চিকিৎসক নাজমুল হক বলেন, সিজারের পর রোগী স্ট্রোক করেছেন। এ জন্য তাকে কুমিল্লা মেডিকেলে পাঠানো হয়।
গুনময় পোদ্দার বলেন, অ্যানেসথেসিয়া ছাড়া রোগীর অপারেশন সম্ভব নয়। তার চেতনা ফিরলে তিনি অপারেশন কক্ষ থেকে বের হন। প্রসূতির মৃত্যুর বিষয়টি কেউ জানায়নি। কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে, তাও বলতে পারছেন না।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মিজান উদ্দিন
Copyright © 2024 Topheadline. All rights reserved.