অফসাইডে দুই ফিল্ডারের মাঝের ফাঁকা জায়গায় বল ঠেলে দিয়ে দৌড়ে দুই রান। এরপরই ওয়ানডেতে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়ে গেলেন ফারজানা হক। যা ফরম্যাটটিতে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটেরও প্রথম সেঞ্চুরির রেকর্ড, ছেলেদের ক্রিকেটে প্রথম এমন কীর্তি গড়েছিলেন মেহরাব হোসেন অপি। এর আগে নারীদের ম্যাচ দেখতে লতা মন্ডল দর্শকদের মাঠে আসার আহবান জানিয়েছিলেন। সেই আহবানে সাড়া দিয়েই গ্যালারিতে উপস্থিত লাল-সবুজ পতাকাধারীরা, যার কৃতজ্ঞতা হিসেবে দারুণ এক ইনিংস উপহার দিলেন ফারজানা!
এর আগে শুরুটা দারুণভাবে করেছিলেন দুই ওপেনার শামীমা সুলতানা ও ফারজানা হক। ফারজানার অনবদ্য সেঞ্চুরি এবং শামীমার ফিফটিতে নির্ধারিত ওভার শেষে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ২২৩ রান সংগ্রহ করেছে। যা ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। শেষপর্যন্ত ফারজানা থেমেছেন ১০৭ রানে। ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হওয়ার আগে ১৬০ বলে এই ডান-হাতি ওপেনার ৬টি চারের বাউন্ডারি খেলেন।
ওয়ানডে সিরিজের শুরুটা বাংলাদেশ নারী দলের জন্য ছিল স্বপ্নের মতো। ফরম্যাটটিতে ভারতকে প্রথমবারের মতো হারায় তারা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটিং ব্যর্থতায় নিগার সুলতানা জ্যোতির দল আর লড়াই জমাতে পারেনি। ফলে বড় ব্যবধানেই হার মানতে হয় টাইগ্রেসদের। ১-১ সমতা নিয়ে তৃতীয় ম্যাচটি দুই দলের জন্যই অলিখিত ফাইনালে পরিণত হয়েছে।
সেই সমীকরণ মাথায় নিয়েই আজ (শনিবার) টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জ্যোতি। কিছুটা চোট থাকায় এই ম্যাচে তার খেলা নিয়েও শঙ্কা ছিল। তবে সেসব ছাপিয়ে তিনিই নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বাগতিকদের।
আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা কিছুটা ধীরগতির হলেও, উইকেট না হারানোটা ছিল বাংলাদেশের জন্য বেশ ইতিবাচক। পাওয়ার-প্লেতে স্বাগতিকরা উইকেটশূন্য ৩২ রান সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে দারুণ বোঝাপড়ায় শামীমা-ফারজানা উভয়ই ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন। তবে ৫২ রান করে শামীমা ফিরে যান স্নেহ রানার বলে। এর মাধ্যমে টাইগ্রেসদের ৯৩ রানের প্রথম উইকেটের জুটি ভাঙে। ৭৮ রানের ইনিংসে শামীমা ৫টি চার হাঁকিয়েছেন।
অন্যপ্রান্তে দারুণ লড়াই চালিয়ে গেছেন ফারজানা। এরপর তার সঙ্গে অধিনায়ক জ্যোতি ৭৩ রানের জুটি গড়েন। পরবর্তীতে রানার বলে ২৪ রান করে ফেরেন জ্যোতি। তার পরপরই ফিরেছেন রিতু মনিও। দেবিকা ভাইধ্যর বলে ফেরেন তিনি।
পরবর্তীতে টাইগ্রেসদের বড় পুঁজি গড়ার লক্ষ্যে ফারজানাকে শেষ পর্যন্ত উপযুক্ত সঙ্গ দিয়ে যান সোবহানা মোস্তারি। ইনিংস শেষে তিনি ২৩ রানে (২২ বল) অপরাজিত ছিলেন। এর আগে ইতিহাসগড়া ফারজানা ঝুঁকিপূর্ণ রানের চেষ্টায় সরাসরি হিটে আউটে হয়ে ফেরেন। বাংলাদেশের হয়ে এর আগে দুটি সেঞ্চুরির কীর্তি ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। সেখানেও আছে ফারজানার নাম। একই ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকান জ্যোতিও।
ভারতের হয়ে রানা দুটি এবং ভাইধ্য নেন একটি উইকেট।