জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রাহমাতুল মুনিমসহ ১০ সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার।
বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে সই করেছেন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের এ তালিকায় অন্যদের মধ্যে রয়েছেন— জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, সড়ক, পরিবহন বিভাগের সচিব এ বি এম আমিনুল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকার, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম ওয়াহিদা আক্তার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য (সচিব) মো. খাইরুল ইসলাম।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ধারা যেভাবে
প্রশাসনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ধারা সম্পর্কে খোঁ নিতে গিয়ে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবের শাসনামলে কর্মকর্তার অভাবে দক্ষদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হতো। ১৯৭৫ সালের মে মাসে তৎকালীন সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়, ‘যেসব ক্ষেত্রে তুলনীয় যোগ্যতম ও দক্ষতাসম্পন্ন টেকনিক্যাল বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পাওয়া দুষ্কর, শুধু সেসব ক্ষেত্রেই চুক্তির ভিত্তিতে অবসর নেওয়ার পরও তাদের নিয়োগ করা যেতে পারে। অন্যান্য ক্ষেত্রে অর্থাৎ যেখানে তুলনীয় যোগ্যতাসম্পন্ন লোক পাওয়া সম্ভব, সেখানে এ নীতির উদার প্রয়োগ বাঞ্ছনীয় নয়।’
১৯৮২ সালের মার্চ মাসের এক আদেশে তৎকালীন সংস্থাপন মন্ত্রণালয় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনর্নিয়োগ বিবেচনার জন্য বলা হয়- অবসর নেওয়ার পর সরকারি চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যাবে।
বিশেষায়িত কর্মসম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষ বিবেচনায় রাষ্ট্রপতির কোটায় আগে মোট পদের ১০ শতাংশ চুক্তিতে পুনর্নিয়োগের বিধান ছিল। ২০০১-০৬ মেয়াদের জোট সরকারের সময় এ বিধান বাতিল করা হয়। ফলে যত খুশি তত নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
সরকারি চাকরিতে অবসরের বয়স ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করা হয়। এরপরও প্রশাসনে বিভিন্ন পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ চলছেই।