নির্যাতন করে আন্দোলন দমন করতে গিয়ে সরকার দেশকে চরম সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রতিনিয়ত সরকার এ অপরিণামদর্শী কাজ করে নিজেদের ফ্যাসিস্ট চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ করছে বলেও দাবি করেন তিনি।
শনিবার (৩ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি। বিবৃতিতে তিনি কুমিল্লা, জামালপুর, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ (শনিবার) ছাত্র-জনতার গণমিছিলেও সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা শান্তিপূর্ণ গণমিছিলে নিষ্ঠুর হামলা চালিয়ে নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীসহ অসংখ্য মানুষকে আহত করে। ছাত্রীসহ অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ এ হামলার কাজে তাদের নারী কর্মীদের আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর নির্লজ্জভাবে লেলিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশের অব্যাহত গ্রেফতার-হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় মেয়ের জামাতার বাড়িতে আশ্রয় নেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি নেতা ও শাহবাগ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান। তিনি স্থানীয় ছাত্রলীগের চাঁদাবাজির মুখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেন গত রাতে। এ ঘটনা শুধু মর্মান্তিকই নয়, হৃদয় বিদারক। দেশের বিভিন্ন জায়গায় একদিকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি, অন্যদিকে পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্যে মানুষ অতিষ্ঠ এবং মারাত্মক হয়রানির শিকার হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে গ্রাম-শহরে যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, সন্ত্রাস, হামলা, মামলা দিয়ে চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমানো যাবে না। ছাত্র গণআন্দোলন নিষ্ঠুরভাবে দমন করতে গিয়ে সব হত্যা, ধ্বংস, নৈরাজ্য ও সঙ্কটের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার এককভাবে দায়ী। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে নির্মম, নিষ্ঠুরভাবে শত শত ছাত্র জনতাকে, এমনকি নিষ্পাপ ছোট্ট শিশুদের মর্মান্তিকভাবে গুলি করে হত্যা করে সরকার মানবতাকেই হত্যা করেছে।’
এসময় মির্জা ফখরুল হত্যা, নির্যাতন, দমন, নিপীড়ন, সন্ত্রাস বন্ধ করে ছাত্র জনতার দাবি মেনে নিয়ে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার সাধারণ ছাত্র-জনতাসহ বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।